• November 21, 2024, 3:48 pm
সংবাদ শিরোনাম
প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে পর্যটন নিয়ন্ত্রণে ৬ সদস্যের কমিটি গঠন আয়ারল্যান্ড সিরিজের নারী দল ঘোষণা গাজীপুর পূবাইলে তুলার গুদামে আগুন ৩০ গুদাম পুড়ে ছাই প্রধান উপদেষ্টার তহবিল থেকে ঋণ দেওয়ার নামে টাকা উত্তোলন গ্রেপ্তার চার আজিমপুরে ডাকাতির পর শিশু অপহরণ করে নিয়ে গেছে ডাকাতদল পর্তুগালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় তথ্য প্রযুক্তি সম্মেলন ওয়েব সামিট-২০২৪ শুরু শহিদ আবু সাঈদের আত্মত্যাগ ফ্যাসিস্ট সরকার পালাতে বাধ্য হয়েছে: মাহমুদুর রহমান রাজনৈতিক দল “বাংলাদেশ সংস্কারবাদী পার্টি (বিআরপি)” আত্মপ্রকাশ গাজীপুরে হাজত খানায় বাদী বিবাদীর টাকা লেনদেনে কনস্টেবল বরখাস্ত ঠাকুরগাঁওয়ে সন্ধ্যা নামতেই শুরু অনলাইন জুয়ার আসর গাজীপুরে টিএনজেড অ্যাপারেলসের পরিচালক গ্রেফতার, ২দিনের রিমান্ড মঞ্জুর শ্রীপুরে জামানের পরকীয়ার জেরে প্রবাসীর স্ত্রীর আত্মহত্যা জিএমপিতে কমিশনার হিসাবে ড. নাজমুলের যোগদান প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন বাতিল সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার হুমকি : সম্পাদক পরিষদ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসির ফল প্রকাশ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সমন্বয়ককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা বাগেরহাটে গাছের সঙ্গে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় চালকসহ দুজন নিহত নরসিংদীতে ভারতীয় অবৈধ প্রসাধনী সামগ্রী ও বিভিন্ন পণ্য উদ্ধার আটক ১ পোশাক শ্রমিক হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ  বাগেরহাটে জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে বিএনপির কর্মসূচীতে হামলা

অপচনশীল প্লাস্টিক গিলে খাচ্ছে বাঁশ শিল্প, বেকার হয়ে পড়ছে কারিগররা!

জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিঃ 45 দেখেছেন
বুধবার, জুলাই ১৭, ২০২৪

জ্যেষ্ঠ প্রতিনিধিঃ

অপচনশীল প্লাস্টিকের কাছে দিনকে দিন মুখথুবড়ে পড়েছে বাঁশ শিল্প, গিলে খাচ্ছে বাঁশ শিল্পের শত শত বছরের পুরনো ঐতিহ্য। এতে বেকার হয়ে পড়েছেন বাঁশ শিল্পের সাথে জড়িত হাজার হাজার কারিগররা। আগে গ্রামগন্জের বিভিন্ন হাটবাজারে চোখে পড়তো অনেকাংশ জুড়ে বাঁশের তৈরি বিভিন্ন জিনিসপত্র নিয়ে দোকান সাজিয়ে বসতে। ক্রমান্বয়ে প্লাস্টিকের বিষাক্ত ছোবলে হারিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। যা এখন আর হাটে বাজারে তেমন চোখে পড়ে না।

গ্রামীণ জনপদে বাঁশ শিল্প এখন তেমন নেই বললেই চলে। বাঁশের দাম বেড়ে যাওয়ায় এর থেকে তৈরি বিভিন্ন পণ্যের দাম দিনদিন বাড়ছে। তাই বাঁশের তৈরি পণ্যের কদরও কমে যাচ্ছে গ্রামগঞ্জে। ফলে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার কয়েক হাজার নারীপুরুষ কারিগরদের ভাগ্যে নেমে এসেছে চরম দুর্দিন।

প্লাস্টিকের সহজ লভ্যতার কারণে অন্যদিকে বাঁশের দাম বেশি হওয়ায় বাঁশের তৈরি জিনিসপত্রের দামও বেড়ে যাওয়ার কারনে মানুষ বাঁশের তৈরি জিনিসপত্রের উপর ক্রমশ আগ্রহ হারায়। এতে প্লাস্টিকের বিষাক্ত ছোবলে ঝুঁকে যাওয়ায় বাঁশ শিল্প চরম সংকটে রয়েছে।

আগে বিশেষ করে গ্রামীণ জনপদ থেকে শুরু করে উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় শহরগুলোতে মানুষ গৃহস্থালি, কৃষি ও ব্যবসা ক্ষেত্রে ও বাঁশের তৈরি সরঞ্জামাদি ব্যবহার করত। কালের বিবর্তনে আধুনিক জীবনধারায় প্লাস্টিকের ব্যবহার ও দিনদিন বাঁশের দাম বেড়ে যাওয়ায় তা এখন বিলুপ্তির পথে। কালের বিবর্তনে বাঁশের তৈরি পণ্য এখন আর আগের মতো চোখেও পড়ে না।

বাঁশের মূল্য বৃদ্ধি আর অপ্রতুল ব্যবহারের কারণে ঐতিহ্যবাহী বাঁশ শিল্প আজ হুমকির মুখে। আজ থেকে ১৪-১৫ বছর আগেও বাঁশের তৈরি সামগ্রী বাচ্চাদের দোলনা, পাখা, কুলা, চালনীসহ বিভিন্ন প্রকার আসবাবপত্র গ্রামঞ্চলে বিস্তার ছিল। কিন্তু এখন এর কদর নেই বললেই চলে ।

যে বাঁশ আগে ১০০ থেকে ১৫০ টাকায় পাওয়া যেত, সেই বাঁশ বর্তমান বাজারে কিনতে হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায়। বাঁশের দাম যেমন বেড়েছে সেই পরিমাণ বাড়েনি এসব পণ্যের দাম। চাহিদা অনুযায়ী বাঁশের উৎপাদন কম থাকার কারণে এবং জনসংখ্যা বৃদ্ধিসহ ঘর বাড়ি নির্মাণে প্রয়োজন মতো বাঁশ বৃদ্ধি হচ্ছে না।

বাঁশের তৈরি আসবাবপত্র বিক্রি করতে আসা সাদ্দার পুল এলাকার আবদুর রহমান (৪৭) জানায়, তাদের গ্রামে বেশকয়েকটি পরিবার এ কাজে নিয়োজিত আছে। অতি কষ্টে বাঁশ শিল্প টিকিয়ে রাখতে ধার-দেনা ও বিভিন্ন সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে কোনোরকম জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন তারা।

বয়োজ্যেষ্ঠরা বলছেন, গ্রামীণ জনপদে বাঁশ ছিল একটি ঐতিহ্য। প্রতি বাড়িতে কমবেশি চাষ হতো বাঁশ। যা দিয়ে তৈরি হতো নিত্যদিনের গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত সকল ধরনের জিনিসপত্র। তবে এখনো মাঝেমধ্যে গ্রামীণ উৎসব ও মেলাগুলোতে বাঁশ ও শিল্পীদের তৈরি খোল, চাটাই, খলুই, ধামা, টোনা, পাল্লা, মোড়া, বাইর, পাতি, খাঁচা, উন্যা, চালুইন, হাজি, হুরা, ওড়া, টুকরি, আধলাই, লাই, আনতা, ছাই, হারল, চোখে পড়ে।

উপজেলার প্রতিটি গ্রামে কম বেশি অনেক পরিবার এ পেশায় সম্পৃক্ত ছিল। বাঁশ-বেত দিয়ে তারা তৈরি করত গৃহস্থালি ও সৌখিন নানা পণ্যসামগ্রী। তা দেখতে অনেকটা আকর্ষণীয় ছিল। এসব বিক্রি করেই চলত গ্রামগঞ্জের এসব মানুষের জীবনযাপন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাঁশের দাম বৃদ্ধি, খরচের তুলনায় লাভ কম ও দিনদিন চাহিদা কমে যাওয়ায় ক্ষুদ্র এ শিল্পের কারিগরদের অধিকাংশই এখন আদি পেশা বদল করে কৃষিসহ নানা পেশায় যুক্ত হয়েছেন।

বাঁশের তৈরি জিনিসপত্র বিক্রি করতে আসা কারিগর রহমান (৩৫) বলেন, বিভিন্ন সমিতি থেকে বেশি সুদ দিয়ে টাকা নিয়ে কোনো রকমে টিকে আছেন তিনি। এ শিল্পটির উন্নতির জন্য সরকারিভাবে যদি অল্প সুদে ঋণ দেওয়া হয় তাহলে টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে।

বিসিক শিল্প নগরী লক্ষ্মীপুরের উপ-ব্যবস্থাপক আসাদুল্লাহ হাসান বলেন, বাঁশ শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের সহ শর্তে ক্ষুদ্র ঋণের ব্যবস্থা দ্রুত সময়ের মধ্যে করে দেয়ার চেষ্টা করা হবে।

লক্ষ্মীপুর কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক ড. মো.জাকির হোসেন বলেন, ‘বাঁশ শিল্পের ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখার জন্য বেশি বেশি বাঁশ চাষ করতে হবে। যেহেতু এটি একটি অর্গানিক প্রোডাক্ট। বিভিন্ন কুটির শিল্পে বাঁশের তৈরি জিনিসপত্র সংরক্ষণ করে এ শিল্পকে ধরে রাখতে হবে। এছাড়া প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার বর্জন করতে হবে। তাহলে বিভিন্ন প্রকার রোগবালাই থেকে মানুষ রেহাই পাবে। বাঁশের তৈরি পণ্যের কদরও বাড়বে।’


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

More News Of This Category

ফেসবুকে আমরা