টানা বন্ধের পর দেশের দক্ষিন- পশ্চিম অঞ্চলের সব চেয়ে বড় যশোরের শার্শার বাগআঁচড়ার সাতমাইল পশুর হাট নতুন করে চালু করেছে উপজেলা প্রশাসন। এতে আনন্দ প্রকাশ করেছেন সাধারণ ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার(২০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে হাটটিতে গরু ছাগল এবং ক্রেতা-বিক্রেতায় ভরপুর হয়ে উঠে।
জানাযায়, স্বৈরাচারের আমলে হাটটি ইজারা না নিয়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে হাটটি পরিচালনা করতো স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামীগের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস কবির বকুল ও কায়বা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি হাসান ফিরোজ টিংকু। তাদের কাছ থেকে ব্যাপারিরা ৩ হাজার টাকা করে ব্যাপারি কার্ড গ্রহন করলেও গরু প্রতি তাদের কাছ থেকে ৫ শত টাকা করে আদায় করা হতো এবং সাধারণ ক্রেতাদের কাছে থেকে গরু প্রতি ১ হাজার থেকে ১২ শত টাকা আদায় করা হতো। অথচ গরু হাট ইজারা না হওয়ায় সরকারি পাশ মুল্য ছিলো ৪ শত থেকে ৬ শত টাকা।
স্বৈরাচার পতনের পরে হাটটি পরিচালনায় আওয়ামীলীগের ওই সকল নেতা না থাকলে ও ছাত্রজনতা সাথে নিয়ে হাটটি ২ দিন পরিচালনা করছিলেন উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু আওয়ামীলীগের ইউনিয়ন সভাপতি বকুল ও টিংকুর কাছ থেকে করা সেই কার্ড এর কোন সুবিধা পাইনি কার্ডধারী ব্যাপারিরা। এখন হাটে কার্ডধারী ব্যাপারী ও সাধারণ ক্রেতাদের একই মুল্যে গরু পাশ শুরু হলে ক্ষোভে ফু্সে উঠে কার্ডধারী ব্যপারীরা হাটে আন্দোলন শুরু করলে বর্তমান আইনশৃঙ্খলা অবনতি থাকায় নিরাপত্তা হীনতায় হাটটি বন্ধ করে দেয় উপজেলা প্রশাসন।
পরে বাগআঁচড়া সাতমাইল গরু হাট বন্ধ ঘোষনায় বিপাকে সাধারণ ক্রেতা ও গরু ব্যবসায়ীরা শিরোনামে বিভিন্ন প্রিন্ট, অনলাইন পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়াতে সংবাদ প্রকাশ হলে সেটি প্রশাসনের নজরে আসে এবং মঙ্গলবার থেকে গরুর হাটটি নতুন করে খুলে দেন।
গরুর ব্যাপারী আজম বলেন, আমি ১৯৯৬ সাল থেকে এই হাটের সাথে জড়িত। এখানে গরু কেনা বেচা করি। এবার হাটটি বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা হতাশায় ভুগছিলাম। কারণ সারাবছর ধরে গরু খামারের গরু লালন-পালন করে এখন মাথায় হাত দেওয়ার উপক্রম হয়েছিলো। বাইরে থেকে ব্যাপারি না এলে আমাদের গরু লোকশানে বেচাকেনা করতে হতো। এখন পশু হাটটি সচল হওয়ায় আমরা খুব খুশি হয়েছি।
স্থানীয় বাগআঁচড়া ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর হোসেনের বলেন, এই হাটটি এর আগে প্রায় ১০ বছর ইজারা নিয়ে চালিয়েছে এই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ইলিয়াছ কবির বকুল। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন অনিয়মের মধ্যে হাট পরিচালনা করেছে। চলতি বছর হাটের কোন ইজারা তারা না নিয়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে তারা হাটটি পরিচালনা করে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন।ছাত্রজনতার সংগ্রাম করে স্বৈরাচার শেখ হাসিনার পতন হওয়ার পর হঠ্যাৎ প্রশাসন হাটটি বন্ধ করে রেখেছেন এটা দুঃখজন।এই হাট থেকে কয়েক কোটি টাকা আত্মসাতে প্রশাসন ও জড়িত ছিলো বলে তিনি অভিযোগ করেন।
এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নয়ন কুমার রাজবংশী বলেন, সাতমাইল গরু হাটটি পরিচালনা করতে ১৩০ থেকে ১৫০ জন জনবল প্রয়োজন। এতো জনবল উপজেলা প্রশাসনের না থাকায় নিরাপত্তাহীনতার কারণে আপাতত হাটটি বন্ধ রাখা হয়েছিলো। পরে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে উদ্ধতন কর্মকর্তাদের নজরে আসে এবং সকল সমস্যার সমাধান পূর্বক হাটটি খুলে দেওয়া হয়েছে।