ফ্যাসিস্ট সরকার ২০১০ সালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে জন্য নাটকীয়ভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত করে। এই ট্রাইব্যুনালে মাধ্যমে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে নাটকীয়ভাবে অনেকের বিচার ও সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর আরও কয়েকজনের বিচার ট্রাইব্যুনালে চলছিল। শেখ হাসিনার হাতে গড়া সেই ট্রাইব্যুনালে তার নামেই গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলো।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে সবার চোঁখ ফাকি দিয়ে দেশ ছাড়েন। এরপর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এই আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
ইতিমধ্যে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তাঁর সরকারের বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও দলের নেতাদের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশনে হত্যার অভিযোগ জমা পড়েছে।
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে চলা হত্যাকাণ্ডের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ট্রাইব্যুনালে চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তুজা মজুমদার, ট্রাইব্যুনালের দুই সদস্য বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মহিতুল হক এনাম চৌধুরী উপস্থিত বিচারকাজ শুরু হয়।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এই অপরাধগুলো বিস্তৃত মাত্রায়, সারা বাংলাদেশ জুড়ে সংঘটিত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর আইনজীবী মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম, এই অপরাধের আসামি যাঁরা, তাঁরা অসম্ভব রকমের প্রভাবশালী, তাঁদের গ্রেপ্তার করা না হলে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করাটা অসম্ভব কঠিন। তাঁদের ভয়ে সাধারণ মানুষ, এমনকি শহীদ পরিবারের সদস্যরা কথা বলতে সাহসী হচ্ছেন না। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আমরা গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন জানিয়েছিলাম।’
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজ বৃহস্পতিবার পৃথক দুটি আবেদন মঞ্জুর করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। তিনি ছাড়াও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন এই ট্রাইব্যুনাল। আগামী ১৮ নভেম্বরের মধ্যে শেখ হাসিনাকে গ্রেপ্তার করে এই ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
কাদেরসহ ৪৫ জনের নাম জানতে চাইলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এই অপরাধীদের অনেকে এখনো রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন। সে কারণে তাঁদের নামপ্রকাশ করা হচ্ছে না বলে জানান তিনি।