পোশাক শ্রমিক সান্ত্বনা হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার রাত সোয়া আটটায় ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর থেকে মিছিল বের করেন প্রগতিশীল সংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে বটতলা এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। পরে সেখানে সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
গতকাল সোমবার আশুলিয়ার ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পাশে সান্ত্বনা নামের এক তৈরি পোশাক কারখানার কর্মীর খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে এই হত্যার দ্রুত বিচার দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী সিয়াম মাহমুদ বলেন, ‘যখন জানা গেছে এটা কোনো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর লাশ না, এটা একজন শ্রমিকের লাশ, তখন সবাই মনে করেছে কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু আমরা যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি কম খরচে প্রায় বিনামূল্যে পড়ছি এটাও তো শ্রমিকদের আয় থেকে আসছে।
তিনি বলেন, ‘জানি না শ্রমিকদের অধিকারগুলো ফিরিয়ে আনা যাবে কি-না। কিন্তু আমরা আমাদের আন্দোলন থামাব না। আন্দোলন চলতে থাকবে। দ্বিতীয় স্বাধীনতার পরেও যদি শ্রমিকের অধিকার বাস্তবায়ন না হয়, তাহলে সেটা কোনো স্বাধীনতা না।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (মার্ক্সবাদী) জাবি শাখার সংগঠক সজিব আহমেদ বলেন, ‘এই সরকারের ঘোষণা করা উচিত ছিল আর কোনো শ্রমিক না খেয়ে পুলিশের গুলিতে মারা যাবে না, আর কোনো শ্রমিক বকেয়া বেতনের দাবিতে রাস্তায় নামবে না।’
তিনি বলেন, ‘৫ আগস্ট সাভার-আশুলিয়ার শ্রমিকরা যে স্পিরিট নিয়ে, আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে এই গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিল তার ফলাফল হিসেবে তারা পেয়েছে বুলেট। অক্টোবরের শুরুতে বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর রাষ্ট্রীয় যৌথবাহিনী গুলি চালিয়ে দুজনকে হত্যা করে। এখনো অনেক আহত শ্রমিক হাসপাতালে কাতরাচ্ছে। এই ঘটনার মধ্যে দিয়ে এই সরকার প্রমাণ করেছে তারা আসলে কাদের সরকার; মালিক শ্রেণীর সরকার নাকি শ্রমিক শ্রেণীর সরকার।
সান্ত্বনার মৃত্যুর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘ওই শ্রমিক কি মানুষ না? তার কি প্রাণ নেই? ওই শ্রমিক যে শ্রম দেয় সেই শ্রমের দ্বারা উৎপাদিত পণ্য বিদেশে পাঠিয়ে আপনি রেমিট্যান্স নিয়ে এসে পুলিশ চালাচ্ছেন, রাষ্ট চালাচ্ছেন। শ্রমিক একটা রাষ্ট্র সচল রাখে, এটা মাথায় রাখতে হবে। অতি দ্রুত এই হত্যাকাণ্ডের বিচার করতে হবে।’