পতিত ফ্যাসিস্ট আমলে বিএনপি ছেড়ে ঘটা করে বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির হাতে ফুল দিয়ে যোগদান করেছিলেন। এরপর ক্ষমতার অপব্যবহার করে জমি দখল, বালু ব্যবসা সহ রাজনৈতিক প্রভাবে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়ে রাতারাতি বনে গেছেন কোটিপতি।
গত ৫ আগস্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর রাতারাতি ভোল পাল্টে আবারো বিএনপি বনে যেতে শুরু করেন। সেই ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসরকে বিএনপির সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের মহানগর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পদে অধিষ্ঠিত করেছেন বিএনপির একদল অসাধু নেতা। বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগ এবং পুনরায় বিএনপি বনে যাওয়া ওই বিতর্কিত নেতার নাম এস.এম মোমেন।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতাকালীন সময় তিনি মদনপুর এলাকার যুবলীগ নেতা অহিদুজ্জামান অহিদের হাত ধরে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। আওয়ামী লীগের সভায় মঞ্চে বন্দর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম.এ রশিদ, জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালীন সহ সভাপতি আরজু ভুইয়া সহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের হাতে ফুলের তোড়া তুলে দিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। এরপর আর তাকে পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। হয়ে উঠেছিলেন অহিদুজ্জামান অহিদ এর অন্যতম সহযোগী। এমন কি এক সময় অহিদুজ্জামানের ব্যবসায়ীক অংশীদারেও পরিণত হয়ে ছিলেন।
মদনপুর এলাকায় সবাই তাকে পাইছার ছেলে হিসেবে চিনলেও আওয়ামী লীগে যোগদানের পর হয়ে যান এস.এম মোমেন। রাতারাতি অর্থসম্পদের মালিক বনে গিয়ে ধরাকে সরাজ্ঞান করেছেন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। অহিদুজ্জামানের নেতৃত্বে অংশ নিয়েছেন আওয়ামী লীগের মিছিল মিটিং সহ বিএনপির ডাকা কর্মসূচি হরতাল অবরোধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে হরতাল বিরোধী মিছিল করেছেন। অভিযোগ রয়েছে সে সময় এস.এম মোমেন বিএনপি নেতাকর্মীদের বিভিন্ন মামলায় আসামি করতেও কাজ করেছেন।
সেই এস এম মোমেন এখন বিএনপি নেতা। পটপরিবর্তনের পর তিনি বিভিন্ন ভাবে চেষ্টা করেছেন বিএনপির সাথে মিশে যাওয়ার। প্রথমেই সে মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহীন আহম্মেদ এর হাত ধরে বিএনপির মিছিল মিটিংয়ে যোগ দিতে শুরু করে। আর শাহীন আহম্মেদ তাকে সামনে এগিয়ে থাকেন। একটা সময় এস.এম মোমেন মিছিলে মহানগর বিএনপির ব্যানার ধরা ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে স্থানীয় গণমাধ্যমে ব্যাপক ভাবে সংবাদ প্রচারিত হলে শাহীন আহম্মেদ তাকে ছেড়ে দেন।
এরপর এসএম মোমেন ভীড়ে যান মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি ও ১৩নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদ এর সাথে। খোরশেদের সাথে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিতে থাকেন। মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের বাড়িতে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদ সৌজন্য সাক্ষাত করতে গেলে সেখানে সকলের ভিড়ে মাসুদুজ্জামান মাসুদের সাথে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করে নির্বাচন নিয়ে মাসুদুজ্জামানের সাথে গুরুত্বপূর্ন আলোচনা করেছেন।
সম্প্রতি তিনি মদনপুর এলাকায় একটি নির্বাচনী তোরণ বানিয়েছেন মাসুদুজ্জামান মাসুদ এর জন্য। সেখানে মাকসুদুল আলম খন্দকার খোরশেদের ছবি ব্যবহার করায় খোরশেদ আবার সেই ছবি ফেসবুকে নিজের আইডিতে শেয়ার দিয়ে ভালবাসা জানিয়েছেন।
তবে আওয়ামী লীগের দোসর হয়েও তাঁতী দলের কমিটিতে গুরুত্বপূর্ন পদে স্থান করে নেওয়ায় এ নিয়ে ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। যা নিয়ে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
অন্যদিকে মহানগর তাঁতী দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দরা বলছেন তারা জানেন না মোমেন কিভাবে তাঁতীদলের কমিটিতে স্থান পেয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে মহানগর তাঁতীদলের আহ্বায়ক মুকবুল, সদস্য সচিব নবী নুর জানান যুগ্ম আহ্বায়ক রাজ্জাক সহ আমরা মোমেন এর বিষয় জানি না, তার নাম কিভাবে আসলো। যেহেতু আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি অবশ্যই কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সেক্রেটারিকে আমরা জানাবো তাঁরা ব্যবস্থা নিবে।




















