বিগত স্বৈরাচার আমলে কাশীপুর ৩ নং ওয়ার্ড এবং তার আশেপাশের এলাকার অঘোষিত ডন হিসেবে যার নামটি শোনা যেত তার নাম গিয়াসউদ্দিন ওরফে গেসু ডাকাত, তিনি ছিলেন ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এবং তিনি গডফাদার খ্যাত সাবেক সাংসদ শামীম ওসমান ও ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল্লাহ বাদলের পক্ষ হয়ে বিশাল এই এলাকাটির অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ করতেন। শোনা যায়, গিয়াসউদ্দিন ও তার ৬ ছেলে এই এলাকায় দলীয় ক্ষমতার জোরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলো, কাশীপুরে চাদাবাজি, ভুমিদস্যুতা, দখলবাজিসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ কার্যক্রম করতো পরিচালনা করতো এই গিয়াসউদ্দিন পরিবার। অভিযোগ রয়েছে, গিয়াসউদ্দিনের বড় ছেলে সুমনের নেতৃত্বেই এই এলাকায় বেশিরভাগ অপরাধ সংগঠিত হতো।
জানা যায়, ৩ নং ওয়ার্ড এলাকায় নিরীহ মানুষের জায়গা দখল, বাড়িঘর নির্মান করতে গেলে চাঁদা, সস্তায় জমি বিক্রি করতে বাধ্য করা, সাধারণ মানুষদের ফাঁদে ফেলে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় ছিলো এই সুমনের নিত্যনৈমিত্তিক কাজ, এর মাধ্যমে পরিবারের পাশাপাশি সুমন নিজেও প্রায় শতকোটি টাকা এবং বিপুল অর্থ সম্পত্তির মালিক হয়েছেন। সুমনের ছিলো সশস্ত্র ক্যাডার বাহিনী যার মাধ্যমে চাদা আদায়সহ অপকর্ম পরিচালন করতো।
৫ আগষ্ট স্বৈরাচার পতনের পর আত্নগোপনে যায় গিয়াসউদ্দিন পরিবার, বেশ কিছু দিন নারায়ণগঞ্জ শহরে পালিয়ে থেকে আবারো প্রকাশ্যে ঘুরাফেরা করতে শুরু করে দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও চাদাবাজ সুমন, তাকে প্রায়ই শহরের মিশনপাড়া, চাষাড়া ও হোসিয়ারী সমিতির আশেপাশে দেখা যায়। খোজ নিয়ে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জের বড় বড় বিএনপি নেতাকে টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে তিনি শহরে প্রকাশ্যে চলাফেরা করছে এবং তার কার্যক্রম চালাচ্ছে অন্যদিকে কাশীপুর ৩ নং ওয়ার্ডের কিছু বিএনপি, মৎস্যজীবী দলনেতা ও কৃষকদল নেতাদেরকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সুমন তার অপরাধ জগতের পার্টনার হিসেবে স্বীকৃতি দেয় তাদের এবং সেই নেতাদের দিয়েই শহর থেকেই চাদাবাজি ও ভুমি দখলসহ সকল কার্যক্রম শহর থেকে পরিচালনা করে আসছে সুমন।
ফতুল্লা থানা সুত্রে জানা যায়, এই সুমনের নামে রয়েছে প্রায় ৪ টি বৈষম্য বিরোধী মামলা, এছাড়াও সন্ত্রাস, চাদাবাজি, ভুমি দখলসহ বিভিন্ন অপরাধে তার নামে আরো অসংখ্য মামলা রয়েছে ফতুল্লা থানায়। তাছাড়া গিয়াসসহ তার বাকী ছেলেদের নামেও রয়েছে বৈষম্য বিরোধী মামলাসহ বিভিন্ন মামলা, যদিও অদৃশ্য কারনে গিয়াসউদ্দিন ও তার ছেলেদেরও কেউই এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি।
বিএনপি নেতাদের ম্যানেজ করে শহর থেকে অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণের এই খবরে আতঙ্কিত কাশীপুরের ৩ নং ওয়ার্ড এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ, পুলিশের বিভিন্ন অভিযানে আওয়ামী লীগের ভেভিলরা গ্রেফতার হলেও নরসিংহপুর এলাকার ত্রাস সুমনকে কেনো গ্রেফতার করা হচ্ছে না। এলাকাবাসীর দাবী, অবিলম্বে এই সুমনকে গ্রেফতার করতে হবে এবং তার শেল্টারদাতা বিএনপি নেতাদেরও কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে।



















